ফারাক্কা বাঁধের বর্তমান অবস্থা ২০২৪
ভারত তাদের ফারাক্কা বাঁধের ১০৯ টি গেট খুলে দিয়েছে। যা বাংলাদেশের বর্তমান বন্যা পরিস্থিতির উপর আরো ভয়াবহ প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাঁধ খুলে দেওয়ার ফলে বাংলাদেশে ১১ লাখ কিউসেক পানি প্রবেশ করবে। ১০৯ টি গেট খুলে দেওয়ার ফলে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদসহ বাংলাদেশেও বন্যার আশংকা করা হচ্ছে।
ফারাক্কা ব্যারেজের ম্যানেজার দেশ পান্ডে গণমাধ্যমকে জানান, ভারতের বিহার ও ঝাড়খণ্ডে বন্যা দেখা দিয়েছে। ফলে পানি বিপৎসীমার ৭৭ দশমিক ৩৪ মিটার ওপর দিয়ে বইতে থাকায় বাধ্য হয়ে গেট খুলতে হয়েছে। ফারাক্কা বাদের পানি ধারণ ক্ষমতা ২৬.২৪ মিটার। বিপৎসীমা ২২.২৫ মিটার এবং সর্তকতাসীমা ২১.২৫ মিটার। বাদের ধারণ ক্ষমতা অতিক্রম করায় শনিবার ৬টি গেট খোলা হয়। আর সোমবার সর্বোচ্চ ১০৯ গেট খুলে দেওয়া হয়। লাল কাপড়ে মুখ বাধা ছেলেদের ও মেয়েদের প্রোফাইল পিকচার
ফারাক্কা বাঁধের গেট কয়টি
ফারাক্কা বাঁধের গেট মোট ১০৯ টি। ১৯৬১ সালে ভারত সোভিয়েত রাশিয়ার সহযোগিতায় ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করে। ফারাক্কা বাঁধের নকশা ও নির্মাণ দুটোই হিন্দুস্তান কনস্ট্রাকশন কোম্পানি দ্বারা তৈরি করা হয়। এ বাঁধের উপর দিয়ে রেলপথ তৈরি করা হয়েছে যা ভারতের উত্তর পূর্ব অংশকে ভারতের সাথে সংযোগ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।এই বাঁধ নির্মাণ করার মূল উদ্দেশ্য ছিল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা বন্দরকে পলি জমা থেকে রক্ষা এবং গঙ্গার শাখানদী ভাগীরথীকে পুনরায় গঙ্গার জলে পুষ্ট করা।
ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের পূর্বে বিভিন্ন সমীক্ষায় বিশেষজ্ঞরা বলেন যে পদ্মা ও গঙ্গার মত বিশাল নদীর উপর বাঁধ নির্মাণের ফলে নদীর গতি বাধাগ্রস্থ করলে নদীর উজান ও বাটি উভয় অঞ্চলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য মারাত্মকভাবে নষ্ট হবে। এ ধরনের নেতিবাচক অভিমত থাকা শর্তেও তখন ভারত সরকার গঙ্গা নদীর উপর ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করে। হুগলী ও ভাগরথীদের সংযোগ দেওয়ার জন্য খাল খনন করে যা পরবর্তীতে বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বিহার রাজ্যের পরিবেশ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
ফারাক্কা বাঁধের দৈর্ঘ্য ১৮ কি.মি লম্বা। এটি বিশ্বের সবথেকে বড় বাঁধগুলোর একটি এই বাঁধের মাধ্যমে ভারত বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে এবং সারাদেশে তা ডিস্ট্রিবিউট করে।
ফারাক্কা বাঁধ কোথায় অবস্থিত
ফারাক্কা বাঁধ গঙ্গা নদীর তীরে পশ্চিমবঙ্গের মালদহ ও মুর্শিদাবাদ রাজ্যে অবস্থিত। ১৯৬১ সালে ফারাক্কা বাঁধের নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং ১৯৭২ সালে এই বাঁধের নির্মাণ কাজ শেষ হয়। এরপর ১৯৭৫ সালে ফারাক্কা বাঁধ চালু করা হয়। ফারাক্কা বাঁধের ধারণ ক্ষমতা ২৫০ লাখ কিউসেক। এই বাঁধটির বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে প্রায় ১৬.৫ কিলোমিটার (১০.৩ মাইল) দূরে অবস্থিত।
ফারাক্কা বাদের কারণে বন্যায় প্রতিবছর লাখ লাখ ভিক্টর ফসলি জমি নষ্ট হচ্ছে এর সাথে প্রায় অর্ধ কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
কিউসেক কি ?
কিউসেক হলো পানি প্রবাহের একক যা সাধারণত সেচ বিভাগ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। প্রতি এক সেকেন্ডে এক ঘনফুট বা ২৮.৩১৭ লিটার পানি প্রবাহিত হলে তাকে এক কিউসেক বলা যায়।
১ কিউসেক = ১ কিউবিক ফুট
১ ফুট = ৩.৪৮ সে মি
১ কিউসেক = ৩০.৪৮৩০.৪৮৩০.৪৮
= ২৮৩১৬.৮সে মি^৩
=২৮৩১৬.৮/১০০০ লিটার
= ২৮৩১৭লিটার
ফারাক্কা বাঁধের ছবি
ফারাক্কা ভারতের সবচেয়ে বৃহৎ বাঁধ গুলোর একটি। গতকাল তারা সবগুলো বাঁধ খুলে দিলেও বাংলাদেশের তেমন কোনো ক্ষতি হবে না বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।
![ফারাক্কা বাঁধ](https://bangla-newspaper.net/wp-content/uploads/2024/08/image-11.png)
![ফারাক্কা বাঁধ](https://bangla-newspaper.net/wp-content/uploads/2024/08/image-12-1024x576.png)
![tanvir mahtab](http://bangla-newspaper.net/wp-content/uploads/2024/10/tanvir-mahtab.jpg)
আমি তানভীর মাহতাব, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতার উপর অনার্স এবং মাস্টার্স সম্পূর্ণ করেছি। আমি এখন Bangla Newspaper সহ এখন টিভি ও নাগরিক টিভি পত্রিকায় কলাম লিখে থাকি।