নামের অর্থ

৮টি জান্নাতের নাম কি কি? জান্নাতের সবচেয়ে বড় নিয়ামত কি?

আসসালামুয়ালাইকুম সবাইকে আজকে আমরা আলোচনা করব জান্নাত নিয়ে। ৮টি জান্নাতের নাম কি কি? জান্নাতের সবচেয়ে বড় নিয়ামত কি?, জান্নাত শব্দের শাব্দিক অর্থ বাগান উদ্যান আবৃত শান্তির স্থান ।ফার্সি ভাষায় এর পারিভাষিক অর্থ বেহেশত ।আখিরাত শব্দের অর্থ কি? আখিরাতের ধারণা

আর ইসলামিক পরিভাষায় জান্নাত শব্দের মানে হচ্ছে প্রত্যেক ঈমানদার যারা তাদের ঈমান নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছে এবং তাদের নেক আমল গুলো বজায় রেখেছে ।

যার ফলে ফলাফলস্বরূপ তাদেরকে মৃত্যুর পর জান্নাত দেওয়া হবে। সুতরাং আমাদের উচিত দুনিয়াতে আল্লাহ তাআলার জন্য এবাদত করা এবং বেশী বেশী ভাল কাজ করা এবং আমাদের আমলনামা গুলোকে পুরো শুদ্ধভাবে বজায় রাখা ।

যাতে আমরা মৃত্যুর পর জান্নাত লাভ করতে পারি আশা করি। আজকে আপনাদের জান্নাতের সম্পর্কে যতটুকু আলোচনা করব আপনারা তা বুঝতে পারবেন। এবং আপনাদের এই পোষ্টটি পড়ে আশা করি ভালো লাগবে।

জান্নাতের আলোচনা

যে আল্লাহকে পায়নি সেই কিছুই পায়নি আর যে আল্লাহকে পেয়েছে তাহলে তার সবই পাওয়া হলো। যে ব্যক্তি আল্লাহর দিক থেকে নিজেকে ফিরিয়ে নিল সে যদি সমস্ত জীবন আরাম-আয়েশে অতিবাহিত করে। তবে আমি আল্লাহর কসম খেয়ে বলতে পারি সে ব্যর্থ অন্তরের দিক দিয়ে তার ভিতরটা একদম ফাঁকা।

আল্লাহপাক রাব্বুল আলামীন ঘোষণা করেছেন আল্লাহর স্মরণ ব্যতীত কোনো জিনিস নেই যা হৃদয়ে প্রশান্তি দিতে পারে ।আল্লাহ মানুষের শাহরুখ থেকেও কাছে এবং মানুষের ভিতরে আল্লাহতালার উপস্থিতি এমন রুটি এবং পানির চাহিদা ।

যেমন ক্ষুধা নিবৃত্ত করতে পানি না পেলে মানুষ পেরেশান হয়ে যায়। তেমনি যে হৃদয় আল্লাহপাকের নেই তবে পেরেশানির কোন চিকিৎসা আল্লাহর স্মরণ ব্যতীত সম্ভব নয়।

হে ভাই ও বোনেরা মানুষ বাদশাহী যায় আল্লাহ পাক বলেন “হে বান্দা নেক কাজ করে আমার কাছে এসে যাও এমন বাদশাহী দেব যা কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না। কিন্তু সে বাদশাহীর কোন ধ্বংসন এই দুনিয়ার বাদশাহির হাতছাড়া হয়ে যায় ।

সে বাদশাহী কোনদিন ধ্বংস হবে না তোমাকে এমন জাওয়ানি দেওয়া হবে যাতে বার্ধক্য আসবে না। কোনদিন তোমাকে এমন জিন্দেগি তো কখনো মৃত্যু আসবে না ।তোমরা সবসময় জীবিত থাকবে কখনো মৃত্যুবরণ করবে না ।তোমাদেরকে এমন রিজিক দেওয়া হবে।

যার জন্য কোন ফিকির করতে হবে না তোমাদের এমন সুস্থতা দেয়া হবে যার পেছনে কোনো অসুস্থতা থাকবেনা হে ভাই ও বোনেরা এই জীবন তো দুনিয়াতে দিবেন না এ জীবন আল্লাহপাক পরবর্তী জীবনে দিবেন অথচ মানুষ চাই সবকিছু।

তাকে এই জীবনে দিয়ে দেয়া হোক দুনিয়ার মোহে তারা অতি পাগল এবং আগ্রহের দিকে অগ্রসর হচ্ছে তার ফলে আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে খুব বেশী কষ্ট পান তাঁর বান্দার ওপর ।

কেননা আল্লাহ তা’আলা তাঁকে এই দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন পরীক্ষার দেওয়ার জন্য আর ফলাফল স্বরূপ তাকে পরকালে দেওয়া হবে কিন্তু মানুষ দুনিয়ার মোহে এতটাই পাগল হয়েছে যে সেই ফলাফলে বেশিরভাগই সবাই হেরে যায় ।

এবং আল্লাহ তায়ালাকে অসন্তুষ্ট করে ফেলে যার ফলে আল্লাহতালা তাদের ওপর হয়ে যায় কিন্তু মানুষ কেন বোঝেনা যে একদিন তাকে মৃত্যুবরণ করতে হবে এবং আল্লাহর কাছে যেতেই হবে ।

তার কাছে সব জবাবদিহি করতে হবে সুতরাং আমাদের উচিত এখন থেকে জান্নাতে যাওয়ার জন্য অগ্রিম টিকিট কাটা নিজেকে এবং নিজেদেরকে পাপ মুক্ত রাখা এবং দুনিয়ার মোহ থেকে নিজেকে বেরিয়ে আসা ।

এবং দুনিয়ার মোহ থেকে বেরিয়ে না আসলে আমরা জান্নাতের দিকে অগ্রসর হতে পারবো না আল্লাহর দিকে অগ্রসর হতে পারবোনা তাই আমাদের উচিত আল্লাহর ইবাদত করা এবং জান্নাতের জন্য অগ্রিম ভাবে নিজেকে তৈরি করা।

কোরআন কারীমে জান্নাত নিয়ে আল্লাহ তা’আলা যা ইরশাদ করেছেন

  • সেদিন অনেক মুখমন্ডল হবে আনন্দে উজ্জ্বল নিজেদের কর্মফলে পরিতৃপ্ত (সূরা গাশিয়া :আয়াত :8. 9)
  • সুমহান জান্নাতে (সূরা গাশিয়া :10)
  • সেখানে তারা অসার কোন কথা শুনবে না ( সূরা গাশিয়া :11 )
  • সেখানে থাকবে প্রবাহমান ঝরনা সূরা গাশিয়া ( সূরা গাশিয়া :12)
  • সেখানে থাকবে উন্নত সুসজ্জিত আসন (সূরা গাশিয়া :13)
  • এবং সংরক্ষিত পানপাত্র (সূরা গাশিয়া: 14)
  • এবং সারি সারি গালিচা (সূরা গাশিয়া: 15) এবং
  • বিস্তৃত বিছানা কার্পেট (সূরা গাশিয়া: 16)
  • আর বালক দল পানপাত্র হাতে দাড়ানো থাকবে ঘিরে থাকবে চারদিক থেকে তাদের সেবায় ঘোরাফেরা করবে চিরকিশোর দল (সূরা ওয়াকিয়া :97)
  • পানপাত্র কুজা ও প্রসবন মিশ্রিত পেয়ালা হাতে (সূরা ওয়াকিয়া: 18).
  • সেখানে তাদেরকে পান করতে দেয়া হবে যানযাবিল মিশ্রিত পানীয় জান্নাতে এমন এক প্রস্রবনের যার নাম সালসাবিল( সূরা দাহর:17 .18) যারা জান্নাতে যাবে তাদের সবার জীবন হবে অনন্য বৈচিত্র্যময়

জান্নাতের সবচেয়ে বড় নিয়ামত কি?

জান্নাতের সবচেয়ে বড় নেয়ামত হলো আল্লাহর দীদার সাক্ষাৎ ।

তখন জান্নাতে সকল বান্দা আল্লাহ তাআলার দিদার সাক্ষাৎ করবেন অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা ঐসকল বান্দাদের সামনে আসবেন যারা আল্লাহর দুনিয়াতে আল্লাহর ইবাদতে মশগুল ছিল আল্লাহর সকল কাজে নিয়োজিত ছিল।

ভালো কাজে তারা সব সময় মশগুল থাকতো আল্লাহকে ভালোবাসো নবীর সুন্নতকে ভালোবাসতো এবং জান্নাতে পৌঁছতে হলে আমাদেরকে আল্লাহ তায়ালার অনুগত ও হযরত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর অনুসরণে পথ দিয়ে পৌঁছাতে হবে ।

সে দিনটা কেমন হবে যখন আমরা আমাদের প্রতিপালক মহান রাব্বুল আলামিন স্বয়ং আল্লাহতায়ালার সামনে আমরা দাঁড়িয়ে থাকব তার দিনটা কেমন হবে ।

যখন আমরা মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে হাজির হব এবং তাকে দেখার যে মুহূর্তটা যে সময়টা সেই সময়টাকে আজ মনে হয় যে কাটবে ।

আমরাএতটা সৌভাগ্য নিয়ে দুনিয়াতে এসে ফিরে আসতে পেরেছি তাই যদি আমরা ওই দিন টা দেখতে চাই আমাদের অবশ্যই দুনিয়াতে ভালো করে যেতে হবে এবং বিপদাপদে গরীব অসহায় সকলকে যতটা পারি নিজের কাজে নিজের সামর্থের মাধ্যমে

তাদেরকে সাহায্য সহযোগিতা করব এবং আল্লাহকে খুশি করব আল্লাহ খুশি তো আমাদের আখেরাতের দরজা অনন্তকালের জন্য খোলা থাকবে সুতরাং মহান রাব্বুল আলামিনের ভালোবাসা পেতে হলে আমাদেরকে এমন কাজে আগ্রহী হতে হবে।

৮টি জান্নাতের নাম কি কি

জান্নাতের স্তর আটটি

  • জান্নাতুল ফেরদাউস
  • জান্নাতুল নাঈম
  • জান্নাতুল আদন
  • জান্নাতুল মাওয়া
  • জান্নাতুল দারুস সালাম
  • জান্নাতু দারুল খুলদ
  • জান্নাতু দারুল মাকাম
  • জান্নাতু দারুল কারার

জান্নাতীদের খাদ্য

জান্নাতীদের সর্বপ্রথম আতিথ্য হবে তিমি মাছ ও বলদের কলিজার অতিরিক্ত অংশ দ্বারা। পৃথিবীর মাটি হবে রুটি রূপ খাদ্য। বেহেশতের খাবার ফলমূল পর্যাপ্ত পাখির বিভিন্ন ধরনের রসালো খাবার এবং সুস্বাদু খাবার জান্নাতে উপস্থিত থাকবে।

তাদের জন্য জান্নাতীদের জন্য জান্নাতীদের জন্য তারা চাইলেই সবকিছু তাদের সামনে উপস্থিত থাকবে এবং তারা জান্নাতে যে সুখ দেখবে এবং ভোগ করবে তা দুনিয়ার সুখ এর কাছে কিছুই না তারা কল্পনাও করতে পারে না ।

এবং পারছে না যে জান্নাত আসলেই কেমন এবং আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ কুদরত অতুলনীয়সেখানে আছে এমন কিছু যা কিছুতেই তৃপ্ত হতে পারে না এবং শুরু আছে শেষ নেই ।

সুতরাং জান্নাতীদের খাদ্য এবং তারা যে পরিমাণ ভোগ করবে ও সুখ পাবে তা তারা কল্পনাও করতে পারছে না।

জান্নাতের বর্ণনা

সম্মানিত ভাই ও বোনেরা জান্নাতে পৌঁছতে হলে আমাদেরকে আল্লাহ তাআলার আনুগত্য ও হযরত সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণের পথ দিয়েই পৌঁছাতে হবে আমাদের জীবনে বাইরে থেকে কোন কিছু গ্রহণ করার প্রয়োজন নেই ।

আমাদের এই শরীরে আত্মাকে আল্লাহ তাআলা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম একটি পথ দেখিয়ে দিয়েছেন আমাদের কর্তব্য হলো নারী আর পুরুষ হই আমরা যেন আমাদের থাকে সেদিকে সে পথে ব্যবহার করি আমাদের আত্মা যেন সে পথ থেকে বিচ্যুত না হয় ।

সে পথের বাইরে যেন আমাদের মুখ না যায় চোখ না যায় আমাদের কান আমাদের হাতের স্পর্শ আমাদের চালচলন সবকিছুই যেন সে পথ থেকে বিচ্যুত না হয় আমাদের অন্তরে যেন সদা জাগ্রত থেকে কেবল আল্লাহ এটাই আমাদের জীবনের লক্ষ্য ।

উত্তীর্ণ হতে হলে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে হবে আর আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার একমাত্র পন্থা হলো রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর পূর্ণ অনুসরণ করা পৃথিবীর কোন দিকে তাকাবার প্রয়োজন আমাদের নেই আমরা দেখব রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কে ।

জীবনাদর্শকে আমাদের কাজ হল কেবল তার পথে তার আদর্শ জীবন যাপন করা অন্য কোন পরিবেশের দিকে তাকাবার সুযোগ আমাদের নেই আমাদের লক্ষ্য একটাই আমাদের কাছে আল্লাহ কি চান বলতে পারবেন কি?

আপনারা তাই আমাদের উচিত আল্লাহ তাআলার ইবাদত করা এবং জান্নাতের যাওয়ার জন্য সঠিক ভাবে সবকিছু পালন করা দুনিয়ার মোহ থেকে বেরিয়ে পরকালের প্রতি অগ্রসর হওয়া ।

এবং জীবনকে ইসলামিক ভাবে পরিচালনা করা নিজেদেরকে সঠিক পথে ফিরিয়ে নিয়ে আসা এটাই জান্নাতে যাওয়ার সর্বাধিক।

পরিশেষে

পরিশেষে এই কথাই বলা যায় যে আল্লাহ তাআলা তার চাওয়ার কথা আমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন হযরত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম ও তার চাওয়ার কথা আমাদেরকে করে দেখিয়ে দিয়েছেন আমাদের কাজ হল তার দেখানো পথে পায়ে পায়ে হেঁটে যাওয়া ।

আল্লাহতায়ালা জানিয়ে দিয়েছেন আমরা যদি সে পথে উঠে আসে তাহলে তিনি আমাদের হয়ে যাবেন এখানে সাদাকালোর নারী কিংবা পুরুষ আর কোন ভেদাভেদ নেই এটাই মূলত জান্নাত পর্যন্ত পৌঁছার পথ সুতরাং আমাদের উচিত আল্লাহ তাআলার সকল চাওয়া গুলো কে সঠিকভাবে পালন করা ।

এবং নবীর সুন্নাহ গুলো সঠিকভাবে পালন করা আশা করি আজকের পোস্টটি পড়ে আপনারা জান্নাতের সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে সবাই ভাল থাকবেন আসসালামু আলাইকুম।

Tanvir Mahtab

আমি তানভীর মাহতাব, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতার উপর অনার্স এবং মাস্টার্স সম্পূর্ণ করেছি। আমি এখন Bangla Newspaper সহ এখন টিভি ও নাগরিক টিভি পত্রিকায় কলাম লিখে থাকি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *