হেল্থ

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীদের খাবারের তালিকা ও ডেঙ্গু হলে করনীয় কি?

বাংলাদেশের ডেঙ্গু ২০২৪ কতজন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে এবং কেন ? ডেঙ্গুর ৭টি সতর্কীকরণ লক্ষণ কি ? ডেঙ্গু কিভাবে প্রতিরোধ করা যায় ?

2024-25 সালের ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীদের খাবারের তালিকা ও ডেঙ্গু হলে করনীয় কি?ডেঙ্গুর জন্য কোন ফল সবচেয়ে ভালো ? ডেঙ্গুর জন্য কোন ট্যাবলেট সবচেয়ে ভালো ? আপেল কি ডেঙ্গুর জন্য ঠিক আছে ? ও ডেঙ্গু হলে কী খাবেন না? আমি কি ডেঙ্গুতে ম্যাগি খেতে পারি ? আমি কি ডেঙ্গুতে ডিম খেতে পারি ? এবং আমি কি ডেঙ্গুতে দুধ পান করতে পারি ? জ্বরে পেঁপে খেতে পারি ? ডেঙ্গুর জন্য কি ভালো নয় ?

কিভাবে ডেঙ্গুতে বমি বন্ধ করবেন? ঠাণ্ডা পানি কি ডেঙ্গুর জন্য ভালো ? ডেঙ্গু কি পিরিয়ডকে প্রভাবিত করে ? ডেঙ্গুর বিপদকাল কত ? ডেঙ্গুর মশা কি উঁচুতে উড়তে পারে ? কেউ কি 4 বার ডেঙ্গু থেকে বেঁচে গেছে ?

আমি কি ডেঙ্গুতে ভাত খেতে পারি ? ডেঙ্গুর জন্য কোন জুস সবচেয়ে ভালো ? ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আজকে এই আলোচনা করব চলুন আর দেরি না করে আমরা আলোচনায় চলে যায়

ডেঙ্গুর জন্য কোন ফল সবচেয়ে ভালো ?

ডেঙ্গু এমন একটি সংক্রামক রোগ যা সাধারণত ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তিকে মশার কামড়ের ধারা ছড়িয়ে থাকে । বর্তমানে ডেঙ্গুর জন্য কোন সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই ও ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধে কোন ভ্যাকসিন নেই ।

আপনি যদি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে ভিটামিন সি এবং খনিজ সমৃদ্ধ ফল আপনার জন্য একান্তই গুরুত্বপূর্ণ । যেমন আপেল, কমলা, লেবু, জাম্বুরা, কিউই, এবং খেজুর খেতে পারেন।

এই ফলগুলো ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তিদের শরীরে ভিটামিন সি এবং খনিজ সমৃদ্ধ জোগাবে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্ষমতা উন্নত করতে পারে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে পারে এবং ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গ উপশম করতে সহযোগী হিসেবে কাজ করব ।

ডেঙ্গু হলে কী খাবেন না?

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগী শরীরের অবস্থা অনেক দুর্বল হয়ে থাকে এমন সময় শুধু পুষ্টি ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করা উচিত। কেননা ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগী জন্য, অতিরিক্ত মসলার খাবার, বিভিন্ন রকমের ভাজাপোড়া, ইত্যাদি খাবার ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

কেননা ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর এমনিতে শরীরে পানির ঘাটতি থাকে, আর ভাজাপোড়া খাবারের জন্য হজমের জন্য অনেক পানি লাগে।

কিভাবে ডেঙ্গুতে বমি বন্ধ করবেন ?

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সাধারণত দেখা যায়, শরীর অনেক দুর্বল হয়ে থাকে মাঝে মাঝে এও দেখা যায় তার বমি বমি ভাব লাগে বমিও হয় এই সময় অনেক চিকিৎসকেরা বলে থাকেন, আদা পানি গ্রহণের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

কেননা এটি ডেঙ্গু রোগীর বমি বমি ভাব মোকাবেলায় সহায়তা করে থাকে। অনেক সময় শরীরের পানি শূন্যতা পূরণ করতে রেহাইড্রেশন সলিউশন গ্রহণের পরামর্শ অনেক ডাক্তাররা দিয়ে থাকেন।

পেঁপে পাতার রস খেলে কি আসলেই প্লাটিলেট বাড়ে কী

ডেঙ্গু পরিস্থিতিতে সাধারণত আমরা অনেকেই শুনে থাকি যে পেঁপে পাতার রস খেলে নাকি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর প্লাটিনেট বেড়ে যায় কিন্তু পেঁপে পাতা রস খেলে প্লাটিনেট বেড়ে যায় এরকম কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই যা জানিয়েছেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ।

কিভাবে ডেঙ্গু নিশ্চিত হয়?

সাধারণত যারা ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয় তারা মূলত এডিস মশার কামড় এর মাধ্যমেই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে থাকে। আর তার ডেঙ্গু জ্বর হয়েছে কিনা, তার নিশ্চিত করার জন্য কয়েক ধরনের টেস্ট রয়েছে ,যার মাধ্যমে ডেঙ্গু জ্বর নিশ্চিত করা যায় অনেক সময় দেখা যায় ভাইরাসটির আরএনএ বডির উপস্থিতি দেখেও নির্ণয় করা সম্ভব।

ডেঙ্গু রোগের প্লাটিলেট কত থাকা প্রয়োজন ?

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো, প্লাটিনেট যা সাধারণত মানবদেহে প্লাটিনেট ১.৫ মিলিয়ন থেকে ৪ লক্ষ পর্যন্ত হয়।

কিন্তু যারা ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে থাকে ,তাদের প্লাটিনেট এর সংখ্যা, ২০ হাজার থেকে ৪০ হাজার অব্দি কমতে থাকে যা সাধারণত আক্রান্ত ব্যক্তিদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ পতঙ্গ হাড়ের অনেক ক্ষতিগ্রস্ত করে থাকে এতে, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার পরে প্লাটিনেটের গণনাও কমে যায়।

প্লাটিলেট কমে যাওয়ার লক্ষণ কি কি? প্লাটিলেট কত হলে স্বাভাবিক?

সাধারণত যারা ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে থাকে তাদের প্লাটিনেট কমে যাওয়ার কিছু লক্ষণ নিচে তুলে ধরা হলো :

  • শরীরের বিভিন্ন স্থান থেকে রক্তপাত হবে এবং ত্বকে বেগুনি রংয়ের চিহ্ন দেখা যাবে কেননা ত্বকের নিচেও রক্তক্ষরণ হবে।
  • আবার মেয়েদের ক্ষেত্রে পিরিয়ডের সময় অতিরিক্ত রক্তপাত হবে।
  • নারী ও পুরুষের উভয়ের মারি বা নাক থেকে রক্তপাত হবে।
  • প্রস্রাব ও মলের সঙ্গে রক্তপাত হবে।
  • যদি শরীরের কোথাও কেটে যায় তাহলে অনেকক্ষণ ধরে রক্তপাত হবে।

সাধারণত যারা ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে থাকে তাদের প্লাটিনেটের সংখ্যা, ৪০ হাজার থেকে ২০ হাজার পর্যন্ত নেমে যেতে পারে। এবং প্লাটিনেটের সংখ্যা যদি দেড় লাখের উপরে থাকে ,তাহলে সেটিকে স্বাভাবিক হিসেবে গণ্য করা হবে।

প্লাটিলেট বাড়ানোর উপায়?

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর শরীরের রক্তে প্লাটিনেট কমে যায়, যার ফলে রোগী আরো দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই প্লাটিনেট বাড়ানোর কিছু, প্রোটিন ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্য হলো : আইরন ,ফোলেট ,ভিটামিন বি, এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট, একটি সুষম খাদ্য গ্রহণ করলে ভালো হয়,আরো রয়েছে শাক, ফল, বাদাম, বীজ,চর্বিহীন, প্রোটিন, এবং শস্য যুক্ত খাদ্য, পাশাপাশি পেপে পাতার রস, খেলে প্লাটিলেট উৎপাদন করতে সহায়তা করতে পারে।

ডেঙ্গুর মশা কি উঁচুতে উড়তে পারে?

আমরা সাধারণত জেনে থাকি যে , ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীকে কোন মশা যদি কামড় দেয় তাহলে সে মশা পরবর্তীতে যাকে কামড় দেবে সেও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হবে। ডেঙ্গু মশা সাধারণত মাটির কাছাকাছি থাকতে পছন্দ করে।

মানুষের বসবাসে থাকার জায়গা যত উচ্চতা বাড়ছে, তত কমছে ডেঙ্গু মশা বা বিভিন্ন মশার লার্ভার সংখ্যা তাই বলে আপনি এই ভুল কোন সময় করবেন না, যে ডেঙ্গু মশা আপনাকে কামড়াতে পারবেনা তাই আপনি, এই ডেঙ্গু পরিস্থিতিতে সর্বদা যত উঁচুতেই বা নিচুতে থাকেন না কেন,

আপনাকে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করুন এবং ডেঙ্গু থেকে কিভাবে বাঁচা যায় সেই প্রক্রিয়াগুলো আপনাকে অনুসরণ করতে হবে ।

ডেঙ্গুর জন্য কোন জুস সবচেয়ে ভালো?

ডেঙ্গু পরিস্থিতিতে যারা ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগী রয়েছে তাদের শরীরের অবস্থা অনেক দুর্বল হয়ে থাকে। এমন সময় তাদের জন্য খুবই প্রয়োজন এবং গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে ,তাদের শরীরের ভিতরে কিভাবে প্রোটিন ও পুষ্টি সমৃদ্ধ খাদ্যের পরিমাণ বাড়ানো যায়।

তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে জুস বিভিন্ন ফলের জুস এর মাধ্যমে, রোগীদের শরীরের পুষ্টি ও প্রোটিন, যোগানো সহযোগিতা হিসেবে কাজ করবে।যেমন : এলোভেরার জুস, যা সাধারণত ডেঙ্গু জ্বরের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে এবং প্লাটিনেট বাড়াতেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এতে রয়েছে ভিটামিন এ ,ভিটামিন সি ,ও ভিটামিন ই,ও রয়েছে অন্য দিকে রয়েছে ডাবের পানি,

যা ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর জন্য অনেক উপকারী ডাবের পানিতে রয়েছে, প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি, ও ইলেকট্রোলাইট, থাকে এবং আরো রয়েছে লেবুর পানি ,যাতে ভিটামিন সি ,এর ভালো উৎস রয়েছে, এবং যা শরীর থেকে ক্ষতিকর উপাদান বের করতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

শেষ কথা

আপনারা ইতিপূর্বে উপরে অনেক তথ্য ও ডেঙ্গুজরে আক্রান্ত রোগীকে কিভাবে প্লাটিনের বাড়ানো যায়, ও প্লাটিলেট এর লক্ষণ কি কি, ডেঙ্গু মশা কত উচ্চতা পর্যন্ত উড়তে পারে ,ও ডেঙ্গু জ্বরে প্লাটিলেট কি পরিমাণ থাকা লাগে,ইত্যাদি সম্পর্কে আপনারা উপরে আলোচনা থেকেই জানতে পেরেছেন।

যদি উপরের তথ্য থেকে আপনাদের কোন প্রকার সহযোগিতা বা উপকার হয়ে থাকে তাহলে ইনশাআল্লাহ আমাদের বাংলা নিউজ পেপার এর পাশে থাকবেন।

Tanvir Mahtab

আমি তানভীর মাহতাব, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতার উপর অনার্স এবং মাস্টার্স সম্পূর্ণ করেছি। আমি এখন Bangla Newspaper সহ এখন টিভি ও নাগরিক টিভি পত্রিকায় কলাম লিখে থাকি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *